● আমাদের শোয়া এবং ঘুমোনোর আগে পা একসাথে করে নেওয়া উচিত এবং সেটাকে হাঁটুর ভিতরের দিকে মুড়ে নিয়ে, হাতের সাহায্য নিয়ে যে কোনো দিকে পাশ ফিরে পা সোজা করে শোয়া উচিত। ওঠার সময়ও সোজা হয়ে ওঠা যাবে না। প্রথমে পাশ ফিরতে হবে, তারপর পা দুটোকে মুড়ে নিয়ে হাতের সাহায্য নিয়ে উঠতে হবে।
কারণ – সোজা উঠলে নাভীর উপর খারাপ প্রভাব পড়বে এবং heart এ রক্তের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়, যা পরে indigestion, asthma, diabetes mellitus, cervical spondylosis, বা heart problem হবার একটা কারণ বলে বিবেচ্য হয়।
● আমাদের রাতে ১০.৩০ এর আগেই ঘুমিয়ে পরে উচিত।
কারণ – Pineal Gland ঠিক থাকলে শরীরের সব কাজ সঠিকভাবে হবে। কথিত আছে যে, ভারতবর্ষে রাত ১২.৩০ এবং ১ টার মধ্যে এটা জাগ্রত হয়। এটা ১০ মিনিটের জন্যে কাজ করলেও তখনই করবে যখন আমরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকব। আর গভীর ঘুমে যেতে হলে সাধারণ ব্যাক্তির কমপক্ষে ২ ঘণ্টা লাগবেই।
● ঘুমোনোর সময় এটা মনে রাখতে হবে যে, ঘর যেন পুরো অন্ধকার থাকে যাতে pineal gland সঠিকভাবে stimulate হতে পারে। শোবার সময় night lamp বা জিরো ওয়াটের বাল্ব এর অভ্যাস না থাকাই ভালো।
কারণ – অন্ধকার ঘরে ঘুমোলে আয়ু বেড়ে যায়। কচ্ছপের আয়ু দুশো-তিনশো বছরেরও বেশী হয়। আর এরা সবসময় নিজেদের ঘাড় এবং মাথা ভিতরে অন্ধকারে ঢুকিয়ে ঘুমোয়। পুরোনো দিনে আমাদের যে সব ঋষি-মুনিরা ছিলেন, তারা সবসময় অন্ধকার গুহাতে থাকতেন এবং তাদের আয়ুও দুশো-তিনশো বছরের বেশী হত।
● শোওয়ার সময় পুরো শরীরকে relax করে শুতে হবে।
কারণ – সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় tension থাকলে সারাদিন মাথা ভারী হয়ে থাকে। তাই রাতে ঈশ্বরকে স্মরন করতে করতে শান্ত মনে শুতে হবে। আর ওঠার সময় ও ভালো চিন্তা নিয়ে বিছানা থেকে উঠতে হবে, তাহলে সারাদিন ভালো যাবে।
● শোওয়ার সময় জানালা খুলে শোয়া উচিত যাতে খোলা বাতাস ঘরে আসে। বন্ধ ঘরে শুলে ঘরে carbon dioxide এর মাত্রা বেড়ে যায়, এর ফলে শরীরে সারাদিন ক্লান্তভাব থাকবে এবং কাজ করতেও মন চাইবে না।
উদাহরণ – বান্দ্রা ক্লিনিকে RA (Rheumatoid Arthritis) –এর একজন রোগী আসতেন যাকে কিছুদিন ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকদিনই তিনি বলেন যে ট্রিটমেন্টের প্রভাবে রাত পর্যন্ত ভালো থাকেন, কিন্তু পরের দিন সকালেই ব্যাথা ফিরে আসে। RA –এর অন্য সব রোগীদের একই ট্রিটমেন্টে খুবই উপকার হচ্ছিল, কিন্তু তার হচ্ছিল না। তাই গুরুজি চিন্তাতে পড়ে গেলেন। তখন গুরুজি রোগীকে জিজ্ঞসা করলেন যে রাতে জানালা খুলে ঘুমোন না বন্ধ করে ? জানা গেল যে তিনি ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে জানালা বন্ধ করে ঘুমোন। তাই গুরুজি সঠিক অনুমান করলেন যে, রাতে জানালা বন্ধ করে ঘুমোনোর কারণে রোগীর শরীরে এবং কোমরে carbon dioxide এর মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল যার কারণে ব্যাথা সকালবেলাতে বেড়ে যাচ্ছিল। গুরুজি পরামর্শ দিলেন যে এক-আধ দিন জানালা খুলে ঘুমিয়ে দেখতে কিরকম থাকেন। ওই রোগী গুরুজির পরামর্শ মেনে চলেন এবং পরের দিন থেকেই দেখা গেল যে সকালবেলা ব্যাথা ফিরে আসা বন্ধ হয়ে গেল এবং খুব তাড়াতাড়ি তিনি LMNT চিকিৎসা দ্বারা ঠিক হতে থাকলেন।
● শোবার সময় প্রথমে বাঁদিকে পাশ ফিরে চারবার শ্বাস নিতে হবে, তারপর সোজা হয়ে শুয়ে আটবার শ্বাস নিতে হবে, এরপর ডানদিকে পাশ ফিরে ষোলোবার শ্বাস নিতে হবে। এইরকম করলে ব্লাড প্রেসারের অসুখ আসার সম্ভাবনা কম থাকবে।
কারণ – বাঁদিকে পাশ ফিরে শুলে সূর্য নাড়ী active হয়। যেখানে ডানদিকে পাশ ফিরে শুলে চন্দ্র নাড়ী active হয়। যোগ চিকিৎসকরাও প্রানায়ম দ্বারা চন্দ্র নাড়ীকে stimulate করে high blood pressure এর রোগের চিকিৎসা করেন।
[যাদের ঘুম আসেনা তাদের জন্যে এটি একটি অত্যন্ত উপকারি চিকিৎসা। সাধারণত ষোলোবার শ্বাস নেওয়ার আগেই ঘুম এসে যাবে। যদি এরপরেও ঘুম না আসে তাহলে মন নিঃস্বাসে রেখে লম্বা শ্বাস নেওয়া শুরু করতে হবে। ছোটো এবং তাড়াতাড়ি শ্বাস নিলে ঘুম আসে না। লম্বা শ্বাস নিলে ব্রেনে বেশী মাত্রায় অক্সিজেন যায় এবং শরীর relax হয়, আর ঘুম তাড়াতাড়ি আসে]।
● শোওয়ার সময় মাথার নীচে বা উপরে হাত রেখে বা চোখকে হাত দিয়ে ঢেকে শোয়া চলবে না। যদি চোখে কোনো আলো পড়ে তাহলে কোনো কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে কিন্তু হাত দিয়ে ঢাকা চলবে না।
কারণ – ঘাড়ের দুপাশ থেকে subclavian arteries বেরোয়, যা কাঁধের উপরের clavicle হাড়ের নীচে থেকে বেরিয়ে axillary এবং brachial arteries নামক নালিকার দ্বারা আঙ্গুল পর্যন্ত রক্তকে পোঁছে দেয়। যখন হাত নিচের দিকে থাকে তখন কোনো হয় না। কিন্তু যদি আমরা হাতকে কাঁধের উপর পর্যন্ত অনেকক্ষণ রেখে দিই – যেমন মাথার নীচে হাত রেখে শোওয়ার সময় হয় – তখন ওই রক্ত নালিকাগুলির clavicle হাড়ের উপর চাপ পড়বে, যার কারনে ওই জায়গাতে রক্তের প্রবাহ ঠিক করে হবে না। সবশেষে এর প্রভাব brachio-cephalic artery এর মাধ্যমে heart এও পড়বে। তাই এরকম হাত রেখে শুলে chest pain হতে পারে, অথবা হাত এবং আঙ্গুল ফুলেও যেতে পারে।
হাত এবং আঙ্গুল ফুলে যাওয়া তাদের বেশী হয় যাদের vitamin B12 থাকে। বাস বা ট্রেনে যাওয়ার সময় যদি অনেকক্ষণ ধরে উপরের রড ধরে থাকা হয়, তাহলে আঙ্গুল ফুলে যায় – তার একটা প্রধান কারণ হল vitamin B12 কমে যাওয়া।
● সকালবেলা ওঠার সময়ও পুরো অন্ধকার থাকা উচিত, তাই সূর্য ওঠার আগেই উঠতে হবে। কারণ – ওঠার সময় ঘরে অনেক আলো থাকলে সারাদিন মাথা ভারী থাকবে। তাড়াতাড়ি ঘুমোলে এবং তাড়াতাড়ি উঠলে শরীর সুস্থ থাকবে।
● সকালবেলা, দুপুর বা বিকেলেই হোক – ঘুম থেকে উঠে খালি মাটিতে তাড়াতাড়ি পা রাখা উচিত নয়। চটিতে পা রেখে বা কিছুক্ষন অপেক্ষা করে খালি মাটিতে পা রাখা যাবে। বিছানাতে পা গরম থাকে, যেখানে মাটি ঠাণ্ডা থাকে। তাই তাড়াতাড়ি উঠে খালি মাটিতে পা রাখলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।